Start up vs Scale up(স্টার্ট আপ এবং স্কেল আপ পার্থক্য)



স্টার্ট -আপ: একটি কোম্পানী শুরু থেকে মার্কেটে নতুন পন্য বা সেবা নিয়ে কাজ করে ব্যাপক গবেষনার মাধ্যমে যা কাস্টমারের প্রয়োজন বা চাহিদা মিটাবে।

স্কেল-আপ:একটি কোম্পানী যা আগে থেকেই মার্কেটে পন্য বা সেবা বিদ্যমান রয়েছে এবং বাজারে দীর্ঘসময় ধরে টিকে আছে।

স্টার্ট -আপ এবং স্কেল- আপের মধ্য মূল যে পার্থক্য গুলো রয়েছে সেগুলো তুলে ধরা হল-

১) প্রোডাক্ট-মার্কেট ফিট: যখন আপনি
স্টার্ট -আপ ব্যবসায় শুরু করবেন তখন নতুন অনেক গবেষণা যেমন- কাস্টমার সেগমেন্টটেশন বা বিভাগীয়করন, কাস্টমার একুয়েজেশন খরচ, পন্যের ফিচার ইত্যাদি করতে হয়। কিন্তু স্কেল-আপে এইসব করতে হয়না যেহেতু কোম্পানীর আগে থেকেই পন্য বা সেবা রয়েছে এবং তারা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী হিসেবে বাজারে রয়েছে। অন্যকথায় বলা যায় যে স্কেল-আপে কোম্পানী যদি "x" ইনপুট করে সেখান থেকে " y" রিটার্ন পাবে। তারা যেহেতু বড় জায়গায় অবস্থান করছে তাই নিশ্চিত হয়েই ইনভেস্ট করে। বিপরীতে একটি স্টার্ট -আপ কোম্পানী নিশ্চিত থাকে না কোথা থেকে কি পরিমান রিটার্ন পাবে। বেশীর ভাগ সময় স্টার্ট-আপ কোম্পানী গূলোর নতুন পন্য বা সেবা
গবেষণা করতে অধিক টাকা চলে যায়।

২) ফান্ডিং স্টেজ: যেহেতু স্টার্ট -আপ এবং স্কেল -আপের গ্রোথ স্টেজ আলাদা হয় তাই এখানে ফান্ডিং স্টেজ ও আলাদা হয়। স্টার্ট -আপে সাধারনত জিরো ফান্ড বা সিড স্টেজে থেকে ব্যবসায় করতে হয়। এই একই স্টার্ট -আপ যখনি পরবর্তী রাউন্ড শুরু করে তখন তা স্কেল-আপ ক্যাটাগরিতে পড়ে। স্কেল-আপের মূল বিষয় হল যদি আপনার একটি দক্ষ টিম, ভাল মার্কেট সু্যোগ থাকে এবং কোম্পানীর ভেল্যুয়েশন অনেক হয় ইনভেস্টদের কাছে ও ফান্ডিং সহজে পাওয়া যায় তবে তা স্কেল -আপ হবে।

৩) টিম মেম্বারদের ভূমিকা: একটি স্টার্ট -আপ কোম্পানীতে প্রাথমিক পর্যায়ে দলের সদস্যরা একসাথে বিভিন্ন কাজ বা দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু এই একই স্টার্ট -আপ যখন স্কেল-আপের দিকে যায় তখন দলের সদস্যদের নির্দিষ্ট কাজ বা দায়িত্ব পালন করতে হয়। যেমন - স্কেল আপে বিক্রয় এবং মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট দুইটি ভিন্ন হয় এবং এদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় যারা বিশেষ বিশেষ কাজ করবে।

৪) ঝুকি :যেহেতু স্টার্ট -আপ কোম্পানী প্রথমে ছোট থেকে শুরু করে তখন তাদের পন্য উতপাদন খরচ বেশী থাকে এবং ক্রেতার সংখ্যা ও কম হয় সেজন্য ঝুকিও তুলনামূলক কম হয়। মূলত স্টার্ট -আপ কোম্পানীর সফলতা নির্ভর করে তথ্য, আইডিয়া এবং কত দ্রুত কাস্টমারের কাছে পোঁছানো যায় ও তাদের কাছ থেকে দ্রুত ফিডব্যাক নেওয়ার মাধ্যমে। বিপরীতে স্কেল-আপ যেহেতু বড় অবস্থানে থাকে তাই এর ঝুকিও একটু বেশি থাকে। যখন আপনি স্কেল-আপে যাবেন তখন অনেক মানুষ কোম্পানী সম্পর্কে অবগত রয়েছে। যেহেতু মার্কেটে অনেক দিন ধরে আছেন তাই পরিচিতিও বেশী থাকে এবং আপনার ইনভেস্টরাও প্রচুর ইনভেস্ট করতে দ্বিধা করবেনা । তাই যত আপনি বড় হবেন তত আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে যখনি নতুন কোন পন্য বা সেবা বাজারে আনতে চাইবেন। একবার কোম্পানীর সুনাম নষ্ট হয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার করা খুবই কঠিন।

৫) সিস্টেমিক পদ্ধতি অনুসরণ : সাধারনত স্টার্ট -আপে খুব কম নিয়ম বা নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করা হয়। স্টার্ট আপের প্রথম দিকে যে কেও যখন তখন যে কোন কাজ করে থাকে। টিম মেম্বারদের স্বাধীনতা থাকে বিভিন্ন কাজ করার যতক্ষণ না তারা বুঝতে পারে কে কোন কাজে ভাল। কিন্তু এই একই স্টার্ট -আপ যখনি স্কেল-আপে যাবে তখন তাদের কে প্রতিটি কাজ সিস্টেমেটিক পদ্ধতিতে করতে হবে। তখন অবশ্যই কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজের দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং প্রজেক্ট যথাসময়ে শেষ করতে হবে।
৬) ম্যানেজমেন্ট হায়ারার্কি: স্টার্ট -আপের প্রাথমিক পর্যায়ের লিডারশীপ সম্পূর্ণ আলাদা হয় যখন তা স্কেল-আপে চলে যায়। আপনি যত বেশি লোক নিয়োগ দিবেন তত বেশি আপনাকে পরিচালনা দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যখন স্টার্ট -আপ টি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকবে তখন ম্যানেজমেন্ট হায়ারার্কি থাকে না এবং কাজ ম্যানেজ করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়। তখন কাজ গুলো অবিজ্ঞ ও অনবিজ্ঞ অনেকের হাতে যাবে এবং নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। কিন্তু স্কেল-আপের ক্ষেত্রে দেখা যায় কর্পোরেট কাজের অবিজ্ঞতা সম্পন্ন লিডার নিয়োগ করা হয়। তাছাড়াও নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট লোক নিয়োগ করা হয় এতে করে কাজ গূলো দ্রুত ও সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয় এবং কোম্পানী সহজে বৃদ্ধি পায়।

৭) অনবোডিং প্রসেস: স্কেল-আপে যখন নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয় তখন তাকে অনবোডিং প্রসেসে কাজ করতে হয়। এর মানে হল স্কেল-আপে কর্মীদের কে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, নীতিমালা বা কোম্পানীর কালচার অনু্যায়ী চলতে হয়। কিন্তু স্টার্ট -আপ যখন আর্লি বা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তখন টিম মেম্বার বা কর্মী রা বেশি নীতিমালা মেনে কাজ করে না এবং কাজের মধ্যে অনেক ফেক্সিবিলিটি থাকে যা স্কেল-আপে থাকে না।

No comments

Powered by Blogger.